![]() | |||||
Jhargram Alapani Subdivision Library(ঝাড়গ্রাম আলাপনি মহকুমা গ্রন্থাগার) |
বই এর পোকা বলতে
যা বোঝাই ঠিক তাই ছিলাম আমি।তখন তো আর এখনকার মতো ফেইসবুক , হোয়াটস্যাপ এর মোহ ছিল
না , বরং বাংলা সাহিত্যের প্রাচুর্যে ঘেরা গল্পের স্বাদ নেওয়াটাই ছিল নেশা। আর সব বই কেনা তো আর সম্ভব নয় , তাই আমায় লাইব্রেরির মেম্বার ও হতে হয়েছিল।
গল্পের বই থাকলে আর কিচ্ছু চাইতাম না , সারা দিন মোহগ্রস্থ হয়ে পড়তাম সেগুলো।
দিন পাল্টেছে
, সাথে মানুষও। এখন বুক (বই) এর চেয়ে অনেক বেশি সময়টা জুড়ে আছে আমাদের ফেইসবুক। আমি
নিজেও ফেইসবুক এ আছি ১০ বছর হলো কিন্তু , এসবের মধ্যে একটা অভ্যেস হারিয়ে ফেলেছি সেটা
হলো - বই পড়ার ইচ্ছে। শুধু কি আমার ?? বেশিরভাগ
বাঙালিদের মধ্যেই এখন বই পড়ার অনীহা। আর বর্তমান প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা তো বিন্দু মাত্র আগ্রহী নয় এসবে। তাহলে কেমন
চলছে এখনকার লাইব্রেরিগুলো ? উত্তরের সন্ধানেই আমাদের টীম Dear - ঝাড়গ্রাম পৌঁছে গেল ঝাড়গ্রামের ডি এম হল - সংলঘ্ন আলাপনি মহকুমা গ্রন্থাগারে।
অনেক দিন পর এখানে এসে
মনে হলো টাইম মেশিন এ করে অতীত এ ফিরে গেছি। কয়েকটা নতুন আলমারি ছাড়া তেমন কোনো কিছুই পরিবর্তন ঘটেনি।
লাইব্রেরিটি আগে
বাণীতীর্থ ট্রাস্ট পরিচালিত ছিল। পরে ১৯৬৬ সালে গভর্মেন্ট এটিকে স্পন্সরড করে। এখানে
প্রায় ২৭ হাজার বই রয়েছে। এটির অনুমোদিত কর্মী সংখ্যা মাত্র ৪ জন (লাইব্রেরিয়ান, লাইব্রেরি
অ্যাসিস্ট্যান্ট , বই দপ্তরী এবং নৈশপ্রহরী) ।
কিন্তু
বর্তমানে এই চারজনই অবসর
গ্রহণ করেছেন। তার
পরিবর্তে আর কোনো নতুন
কর্মী নিয়োগ হয়নি।
এখন লাইব্রেরির অবস্থা খুবই শোচনীয়।
এখানকার বই গুলোর রক্ষনা বেক্ষণের কোনো
সুব্যবস্থা নেই , না রয়েছে ভালো পরিষেবা দেওয়ার উপযুক্ত ব্যবস্থা।
এখানে ২০১০
সালের এপ্রিল থেকে লাইব্রেরি ইনচার্জ হয়ে আসেন সৌরীন্দ্র
মোহন শতপতি মহাশয় । উনি
২০১৪ তে প্রমোশন পেয়ে
বন্ডাইয়ের পাঠগার এ বদলি
হয়ে চলে যান।সেই সময় উনি
৩ দিন করে দুই
লাইব্রেরিতেই চার্জ এ ছিলেন
।
বন্ডাইয়ের
পাঠগার থেকে উনি ২০১৬ সালের ডিসেম্বর
এ অবসর গ্রহণ করেন। বর্তমানে গর্ভারমেন্ট এর কোনো রকম অর্ডার না থাকলেও শুধু মাত্র লাইব্রেরিটি কে ভালোবাসেই উনি রোজ বিকেল ৫ টা থেকে ৭ টা অব্দি এখানে পরিষেবা দিতে আসেন। উনি ওনার কিছু অভিমানের কথা শেয়ার করেছেন আমাদের সাথে -
![]() |
সৌরীন্দ্র মোহন শতপতি এবং ওনার বর্তমান অ্যাসিস্ট্যান্ট। |
২০১৬ প্রাক মুহুতে প্রায়
দুই লক্ষ যদিও
বই কেনা হয়েছিল , কিন্তু
সে
বই আজ অব্দি এখনো ক্যাটালগিং , ক্লাসিফিকেশন কোনোটাই হয়নি উপযুক্ত কর্মীর অভাবে । তাই
সেগুলো এমনি পরে আছে পাঠকদের পরিষেবাও দেওয়া সম্ভব নয়।
উনি মনে করেন লাইব্রেরিতে পাঠক কমে যাওয়ার অন্যতম প্রধান
কারণ হলো এখানকার কর্মীর অভাব ,তাই উপযুক্ত পরিষেবা দেওয়া যাচ্ছে না । তা ছাড়াও অন্যান্য লাইব্রেরির মতো এটি আধুনিকরণ
হয়নি। কম্পিউটার সিস্টেম এখনো চালু হয়নি।
ঝাড়গ্রামের এত বছরের ঐতিহ্যময় পুরোনো লাইব্রেরিটিকে
ঠিক ভাবে পরিচালনা করতে গেলে আরো কর্মী নিয়োগ খুব প্রয়োজন। এসব পরিষেবা থাকলে আবার
অনেক নতুন পাঠকদের সমাগম ঘটবে বলে আসা করা
যায়।